1. smmarufbillah@yahoo.com : admin : Maruf Billah
  2. shamim.unisa@gmail.com : Shamim Hossain : Shamim Hossain

এআইআইবি’র কাছে ১.৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা চাইল বাংলাদেশ

  • পোস্টিং সময় : সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১২ Time View

চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মোকাবিলা ও সংস্কার কার্যক্রমে সহায়তা পেতে বাংলাদেশ সরকার এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)-এর কাছে ১.৫ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা চেয়েছে। বিশেষ করে ব্যাংক খাতের সংকটাপন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো ঘিরে চলমান অস্থিরতা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চাপ এবং রাজস্ব ঘাটতি—এসব কারণেই এ সহায়তার প্রয়োজনীয়তা তীব্র হয়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা যায়, জলবায়ু নীতি-ভিত্তিক বাজেট সহায়তা কর্মসূচির আওতায় গত ১৩ আগস্ট এ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এআইআইবি প্রাথমিকভাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রস্তাবিত কর্মসূচি পর্যালোচনা করে সময়মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

রাজস্ব ঘাটতি ও বাজেট চাপ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে রাজস্ব আদায় আগের বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ বেড়েছে। তবে লক্ষ্য পূরণে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬,৫০০ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কারণে আগের অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ কম ছিল, ফলে ঘাটতি মেটাতে বিকল্প উৎসের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, “রাজস্ব সংগ্রহ ধীরগতির কারণে সরকার বাধ্য হচ্ছে বাজেট সহায়তার ওপর নির্ভর করতে। তবে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো সহায়তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।”

সংস্কার ও ব্যাংক খাতের চ্যালেঞ্জ

বিশ্লেষকদের মতে, বাজেট সহায়তার অন্যতম শর্ত হলো সংস্কার ত্বরান্বিত করা। বিশেষ করে ব্যাংক খাতের অস্বচ্ছল ও দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন। ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, “কিছু প্রতিষ্ঠানকে অবসায়ন করতে হবে, আবার কিছু প্রতিষ্ঠানকে পুনঃমূলধনীকরণ করতে হবে। এ জন্যই বাজেট সহায়তা দরকার।”

বিদেশি ঋণ ও ঝুঁকি

এআইআইবি’র ঋণকে “হার্ড লোন” বলা হয়, কারণ এটি বাজারভিত্তিক সুদ হারে নিতে হয়। সুদের হার ৬ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা সরকারের ঋণভার আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, “বিদেশি ঋণ ইতিমধ্যেই অ্যালার্মিং পর্যায়ে। তাই নতুন ঋণ অবশ্যই অগ্রাধিকার খাতে ব্যবহার করতে হবে।”

আগের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

গত অর্থবছরে বাংলাদেশ রেকর্ড ৩.৪ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা পেয়েছিল। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকে বাজেট সহায়তার পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে। বর্তমানে এডিবির সঙ্গে অন্তত তিনটি কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চলছে, যার আওতায় ২০২৬ সালের মধ্যে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৭ সালে আরও ৫০০ মিলিয়ন ডলার আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকেও আসন্ন দুই অর্থবছরে ২.৭৭ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিলেছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাজেট সহায়তা শুধু বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ জোরদার নয়, বরং সংস্কার কার্যক্রমের বহিঃপ্রণোদক হিসেবেও কাজ করে। তবে এর কার্যকারিতা নির্ভর করবে ব্যবস্থাপনার দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ওপর।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন
Copyrights© 2025 BDSkyNews. All rights reserved.
Site Customized By NewsTech.Com