মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য একটি ডকুমেন্টারিতে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে বিবিসি। তবে মানহানির অভিযোগে কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। বিষয়টি জানায় আলজাজিরা, বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে।
বিবিসির চেয়ারম্যান সামির শাহ হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের উদ্দেশে একটি ব্যক্তিগত চিঠি পাঠিয়ে জানান, প্যানোরামা সিরিজের জন্য তৈরি ওই ডকুমেন্টারিতে ট্রাম্পের ভাষণ সম্পাদনার ক্ষেত্রে গুরুতর ভুল হয়েছে এবং এ জন্য প্রতিষ্ঠানটি দুঃখ প্রকাশ করছে।
তবে বিবিসি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে—এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানহানির মামলা করার মতো শক্ত ভিত্তি নেই। বিতর্কিত ডকুমেন্টারিটি পুনঃপ্রচার করারও কোনো পরিকল্পনা নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ডকুমেন্টারিটি তৈরি করেছিল একটি স্বতন্ত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। সেখানে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ট্রাম্পের বক্তব্যের দুই ভিন্ন অংশ থেকে তিনটি উদ্ধৃতি এমনভাবে সাজানো হয়েছিল যেন তিনি সমর্থকদের সহিংসতার দিকে উসকে দিচ্ছেন। বাস্তবে ওই বক্তব্য দুটির মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা ব্যবধান ছিল এবং সেখানে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের আহ্বানও ছিল, যা ভিডিও থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর ট্রাম্পের আইনজীবীরা বিবিসিকে ডকুমেন্টারি প্রত্যাহার, প্রকাশ্যে ক্ষমা এবং ক্ষতিপূরণের দাবি জানায়। তাদের দাবি—কমপক্ষে ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, নইলে মামলা করা হবে।
এদিকে বিবিসিতে দীর্ঘদিন ধরে ‘পদ্ধতিগত পক্ষপাত’ নিয়ে দ্য টেলিগ্রাফে প্রকাশিত ফাঁস হওয়া রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ বিতর্কের জেরে পদত্যাগ করেছেন মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং নিউজ প্রধান ডেবোরা টার্নেস। টার্নেস বলেন—“শেষ দায়িত্ব আমারই।” ডেভিও স্বীকার করেন যে প্রতিষ্ঠান কিছু ভুল করেছে এবং তার দায় তিনি নিচ্ছেন।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্র—কোনো দেশেই ট্রাম্পের ক্ষতিপূরণ মামলা এগিয়ে নেওয়া কঠিন হবে। কারণ তিনি শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন, তাই তার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে—এটি প্রমাণ করা কঠিন। এছাড়া যুক্তরাজ্যে মামলা করার নির্ধারিত সময়সীমাও পেরিয়ে গেছে। আর ডকুমেন্টারিটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রচারিত না হওয়ায় সেখানেও ক্ষতির প্রমাণ দেখানো বেশ জটিল হবে।
Leave a Reply