বক্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপনের অভিযোগে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে “আইনি লড়াইয়ে নামা ছাড়া উপায় থাকবে না”।
সম্প্রতি ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, বিবিসি তার ভাষণ সম্পাদনা করে এমনভাবে প্রচার করেছে যাতে সেটি “উস্কানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর” মনে হয়। তার দাবি, আসল বক্তব্য ছিল “শান্তি ও সংযমের বার্তা”, কিন্তু সেটি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা বিবিসিকে পাঠানো এক নোটিশে জানিয়েছেন, সংস্থাটি যদি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা না চায় এবং সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্টারিটি প্রত্যাহার না করে, তবে ট্রাম্প এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবিতে মামলা করবেন।
বিবিসির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং উপযুক্ত সময়ে আনুষ্ঠানিক জবাব দেওয়া হবে। এদিকে, সংস্থার চেয়ারম্যান সামির শাহ ঘটনাটিকে “বিচারিক ভুল” হিসেবে উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
ফক্স নিউজের দ্য ইনগ্রাহাম অ্যাঙ্গেল অনুষ্ঠানে উপস্থাপক যখন জানতে চান ট্রাম্প সত্যিই মামলা করবেন কি না, তখন তিনি বলেন, “আমার মনে হয় করা উচিত। কারণ তারা জনগণকে ভুল তথ্য দিয়েছে এবং নিজেরাই তা স্বীকার করেছে।”
বিতর্কিত ডকুমেন্টারিটি ২০২৪ সালের নভেম্বর নির্বাচনের আগে প্রচারিত হয়। পরে ডেইলি টেলিগ্রাফ–এ ফাঁস হওয়া একটি নথিতে দেখা যায়, ট্রাম্পের ৫০ মিনিটের ব্যবধানে দেওয়া দুটি বক্তব্য ইচ্ছাকৃতভাবে একত্রে সম্পাদনা করে দেখানো হয়েছিল, যাতে মনে হয় তিনি দাঙ্গার আহ্বান জানিয়েছেন।
ঘটনার পর বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি ও বার্তাপ্রধান ডেবোরা টারনেস পদত্যাগ করেন। তারা বলেন, কিছু ভুল হয়েছিল, তবে তা বিবিসির সামগ্রিক নিরপেক্ষতার প্রশ্ন নয়।
ব্রিটিশ সরকার এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সংস্কৃতি মন্ত্রী লিসা ন্যান্ডি সংসদে বলেছেন, “বিবিসির দায়িত্বশীলতা ও আধুনিক যুগে তার ভূমিকা পুনর্নির্ধারণের প্রয়োজন রয়েছে।”
এদিকে, ট্রাম্প-বিবিসি বিতর্কের জেরে রিফর্ম ইউকে দলও বিবিসির সঙ্গে তাদের যৌথ প্রামাণ্যচিত্র প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়িয়েছে বলে জানা গেছে।
Leave a Reply