হাসিনার দায় স্বীকার
আনন্দবাজার পত্রিকায় নিজের দোষ স্বীকার করে দেয়া শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারের খবর গোপালগঞ্জে পৌঁছলে সর্বত্র নেমে আসে নীরবতা। এ ব্যাপারে মতামত জানতে চাইলে অনেকেই এড়িয়ে যান। এক ধরনের ভয় ও আতঙ্ক কাজ করছে বেশির ভাগ মানুষের মনে। তবে অনেকেই আবার খোলামেলা মত দিয়েছেন। এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান বলেন, শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন পর হলেও স্বীকার করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে এটি যে মৌলিকভাবে ভুল ছিল সেটিও বলেছেন। আমার কথা হলো-এ ধরনের দায় স্বীকার করা শেখ হাসিনার রাজনীতির ইতিহাসে নেই। আমি বলবো বিলম্ব হলেও রাজনৈতিক বাস্তবতা স্বীকার করে সৎ সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। পরিপক্বতার পরিচয় দিয়েছেন। মূল বিষয় হলো- জুলাই আন্দোলনে যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে তার নির্দেশে হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার নির্দেশেই হত্যার মতো জঘন্য কাজ করেছে। এ অবস্থায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশে যে বিচারিক কার্যক্রম চলছে তা সঠিকভাবে এগুচ্ছে। এর আগে জুলাই আন্দোলনের হত্যাকাণ্ডসহ পুরো দায় বিএনপি, জামায়াত ও ছাত্র-জনতার ওপর চাপিয়েছেন। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে দেয়া সাক্ষাৎকার প্রমাণ করে আগে যা বলেছেন সব ছিল মিথ্যা। আসলে সত্য এক সময় বেরিয়ে আসে। নিজের মুখেই বেরিয়ে আসে।
গোপালগঞ্জ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাক্তার মহব্বত হোসেন মিয়া বলেন, আসলে তার ক্ষমতার দাম্ভিকতা তাকে অন্ধ করে ফেলে। তবে তার এ দায় স্বীকার ভবিষ্যৎ রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
গোপালগঞ্জ সদরের কলেজ মসজিদ রোডে চেম্বারে কথা হয় ডাক্তার মো. শাহজালাল শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে শেখ হাসিনা কি বলেছিলেন আর এখন কি বলছেন? রাজনীতিবিদদের এ ধরনের চরিত্র থেকে দূরে থাকা উচিত। গোপালগঞ্জ হাজী লাল মিয়া সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার বক্তব্য এটাই প্রমাণ করে রাজনীতিবিদদের বক্তব্যেও শেষ বলতে কিছু নেই। সাবেক সরকারি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম মিয়া বলেন, বিষয়টি ইতিবাচক। শিক্ষানুরাগী শরিফুল ইসলাম বলেন, তিনি ভুল করেছেন। স্বীকার করেছেন। তবে এ জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। এ ছাড়া, কমপক্ষে ত্রিশজনের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বললে তারা তাদের মতামত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তাদের মনে একধরনের ভয় ও আতঙ্ক দেখা গেছে। শহরের বাসিন্দা গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই। মন্তব্য করে বিপদে পড়বো নাকি?
Leave a Reply