জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ না দেখা পর্যন্ত সনদে স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
তিনি বলেন, “জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে সরকারকে প্রথম খসড়া আদেশটি গ্রহণ করতে হবে এবং সংবিধান সংস্কার বিলের খসড়া প্রণয়ন ও তা প্রকাশের উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার যদি আইনি ভিত্তিসম্পন্ন আদেশ গ্রহণ করে, তবে এনসিপি সনদে স্বাক্ষরের বিষয়ে অগ্রসর হবে।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদের বাস্তবায়ন কাঠামোসহ সুপারিশ গতকাল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে জমা দেয়। কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, সংবিধান সংশোধনের বিষয়গুলো গণভোটের মাধ্যমে এবং বাকি ৯টি সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন করতে পারবে।
উল্লেখ্য, জুলাই সনদ প্রণয়নের পর ১৭ অক্টোবর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল এতে স্বাক্ষর করলেও এনসিপি বিরত থাকে। দলটির অবস্থান ছিল—সনদের বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তারা এতে সই করবে না।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমরা চাই জুলাই সনদ রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আইনি ভিত্তি পাক। সরকার প্রথম প্রস্তাব বা খসড়া আদেশটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।”
তিনি আরও জানান, কমিশনের দুটি প্রস্তাবের মধ্যে সংবিধানবহির্ভূত সংস্কারের বিষয়ে সরকারের নির্বাহী পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ থাকলেও দ্বিতীয় প্রস্তাবে (সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত অংশে) অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। তার ভাষায়, “এই অস্পষ্টতা দূর না হলে পুরো সংস্কার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।”
এনসিপি নেতা বলেন, “সংবিধান সংস্কার পরিষদ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করলে প্রস্তাবিত বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে গৃহীত বলে গণ্য হবে—এ ধরনের ধারা অনেক গণতান্ত্রিক দেশে প্রচলিত। গণভোটের ম্যান্ডেট বাস্তবায়নে এটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ।”
তিনি প্রথম খসড়া প্রস্তাবে কিছু সংশোধনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “‘সংসদ করতে পারবে’ শব্দের পরিবর্তে ‘করবে’ ব্যবহার করতে হবে এবং সংবিধান সংস্কার বিলের ক্ষেত্রে ‘বিবেচনা করবে’ শব্দের অস্পষ্টতা দূর করা প্রয়োজন।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন, সারোয়ার তুষার, খালেদ সাইফুল্লাহ এবং যুগ্ম সদস্যসচিব ফরিদুল হক প্রমুখ।
Leave a Reply