পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন না করে নিজের নামের সাথে ডক্টর যোগ করেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আইসিটি বিভাগের পরিচালক হাজেরা খাতুন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সরকারি ওয়েবসাইটে তার নাম ড. হাজেরা প্রদর্শন করা হয়েছে। দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসা স্থাপন ও পরিচালনা প্রকল্প এর পরিচালক পদে অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করছেন এই কর্মকর্তা । দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ইসলাম প্রচার ও প্রসারে নিয়োজিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মত একটি মর্যাদা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ভুয়া ডক্টর পদ পদবিধারী সুযোগ দেওয়া হলে জাতীয় এই প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ অনুবাদ ও গবেষণাকর্ম প্রশ্নবিদ্ধ হবে এমন ধারণাই করছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ওয়েব সাইট অনুসন্ধান করে জানা যায়, আইসিটি বিভাগের পরিচালক পদে রয়েছেন ড. হাজেরা খাতুন। পরিচালক পদে আরো একাধিক ডক্টর রয়েছেন। পিএইচডি ডিগ্রির বিষয়ে জানতে চাইলে দ্বিধা সংকোচ ছাড়াই তারা অভিসন্ধভসহ সব তথ্য প্রদান করেন। (কথিত ডক্টর) হাজেরার কাছে পিএইচ ডিগ্রি সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমেরিকান ইষ্ট কোস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
অনুসন্ধানে আমেরিকায় পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ব বিদ্যালয়ের তালিকায় এ নামে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি আমেরিকার ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায়ও এ নামের কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই। তবে আমেরিকান ইষ্ট কোস্ট ইউনিভার্সিটি নামে একটি অন লাইন পোর্টাল রয়েছে। এই পোর্টালে প্রদত্ত তথ্যমতে, এ প্রর্টাল ইউনিভার্সিটিরও কোন পিএইচডি প্রোগ্রাম নেই।
হাজেরা খাতুন পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন না করেই নিজের নামের সাথে সম্মান সূচক ডক্টর শব্দটি যুক্ত করে কতৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কিভাবে ওয়েব সাইডে প্রদর্শন করলেন এটিও সংশ্লিষ্ট অনেকের প্রশ্ন?
২০১৭ সালে শামিম মোহাম্মদ আফজালের একক ক্ষমতায় এই কর্মকর্তাসহ আরো উনিশ জন কর্মকর্তার পদোন্নতি দেওয়া হয় ইসলামি ফাউন্ডেশনের চাকুরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে। ২০২২ সালের সিএজির করা অডিটের ২৯ টি আপত্তির মধ্যে এই আপত্তিটি ছিল বিশেষ উল্লেখ যোগ্য। গত সাত বছরে এ অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি করা হয় নি। শামিম মোহাম্মদ আফজালের দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসা স্থাপন ও পরিচালনা প্রকল্পে বিশাল অঙ্কের অনিয়ম উদ্ঘাটিত হয় সিএজির ওই প্রতিবেদনে। রহস্যজনকভাবে এ প্রকল্পেরও অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় হাজেরা খাতুনকে।
হাজেরা খাতুন পিএইচডি ডিগ্রির অর্জন না করে নামের সাথে কীভাবে সম্মান সূচক ডক্টর পদবী ব্যবহার করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করলেন এ বিষয়ে ইফার ডিজি আ. সালাম খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply