1. smmarufbillah@yahoo.com : admin : Maruf Billah
  2. shamim.unisa@gmail.com : Shamim Hossain : Shamim Hossain

১৬ বছরের ‘দুঃশাসনের’ চিত্র নিয়ে নভেম্বর মাসে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’

  • পোস্টিং সময় : শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৪ Time View

আগামী অক্টোবরের মধ্যে ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’ নির্মাণ শেষ হবে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে উদ্বোধন

আগামী অক্টোবরের মধ্যে ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’-এর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে, এবং নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই জাদুঘরটিতে দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, বিশেষ করে শেখ হাসিনার শাসনামলের ১৬ বছরের দুঃশাসনের সব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ঐতিহাসিক তথ্য ও দৃশ্য উপস্থাপন করা হবে।

শনিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জাদুঘর নির্মাণের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে এই তথ্য দেন। বৈঠকে বলা হয়, জাদুঘরে ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন-আয়নাঘর, শাপলা হত্যাকাণ্ড, ভোট ডাকাতিসহ’ শেখ হাসিনার শাসনামলের নৃশংসতা এবং রাজনৈতিক অত্যাচারের সব চিত্র সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করা হবে।

‘গণভবন’ নামে পরিচিত জাতীয় সংসদের উত্তর কোণে অবস্থিত এই ভবনটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিচিহ্ন বহন করে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এবং পরে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা এই ভবনে বাস করতেন। দেয়ালে থাকা বিভিন্ন প্রতিবাদ ও গণঅভ্যুত্থানের স্লোগান যেমন ‘হাসু আপা পালাইছে’, ‘কই গেলি হাসিনা’, ‘শাপলা চত্বরের বিচার চাই’, ‘কিলার হাসিনা’ প্রভৃতি প্রতিবাদের চিহ্ন এই জাদুঘরের কেন্দ্রীয় ভাবনা।

শাসনামলের নৃশংসতা তুলে ধরার পাশাপাশি গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ রূপে রূপান্তর করার প্রস্তাব সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদিত হয়। এরপর চলতি বছরের ১৫ জুলাই পূর্তকাজের অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এই অনুমোদনের আগেই সরকার বিভিন্ন স্মৃতি সংরক্ষণ এবং নির্মাণ কাজ শুরু করে।

সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান, আগামী অক্টোবরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাদুঘর উদ্বোধনের লক্ষ্য রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “আমরা এই জাদুঘরকে এমন একটি স্থান হিসেবে গড়ে তুলছি যেখানে শেখ হাসিনার শাসনামলের ফ্যাসিজম ও অত্যাচারের ইতিহাস সঠিক তথ্যের মাধ্যমে জীবন্ত থাকবে। এটি হবে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী স্মারক।”

জাদুঘরের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন, জাদুঘরে আসা দর্শনার্থীরা ৫ আগস্ট গণভবনে ঘটে যাওয়া জনতার ঢল এবং প্রতিবাদের অনুভূতি অনুভব করতে পারবেন। তিনি বলেন, “মানুষের মধ্যে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলাই এই জাদুঘরের মূল উদ্দেশ্য।”

জাদুঘরের চিফ কিউরেটর তানজীম ওয়াহাব জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) প্রসিকিউশন টিম এবং গুম বিষয়ক তদন্ত কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ চলছে। তিনি বলেন, “এই জাদুঘরটি একক ধরনের হবে যেখানে ১৬ বছরের দুঃশাসনের ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করা হবে। দর্শনার্থীরা জানতে পারবেন শেখ হাসিনা কীভাবে দেশের শাসনকাজ পরিচালনা করতেন।”

এছাড়া, গুম-খুনের নির্দেশনার বিভিন্ন অডিও রেকর্ডিং ইতোমধ্যে জাদুঘর কর্তৃপক্ষের হাতে এসেছে, যা এখানে প্রদর্শন করা হবে। এছাড়া গুমের শিকার পরিবারগুলোকে কীভাবে মিথ্যা সান্ত্বনা দেওয়া হতো তার চিত্রও তুলে ধরা হবে।

জাদুঘরে একটি প্রদর্শনী কেন্দ্র থাকবে, যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শেখ হাসিনার শাসনামলের ১৬ বছরের দুঃশাসন বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, গুম তদন্ত কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের গভর্নিং বডির চেয়ারপারসন মেরিনা তাবাসসুম।

জাদুঘরের গবেষকদের মধ্যে ছিলেন ড্যানিয়েল আফজালুর রহমান, কবি হাসান রোবায়েত, মালিহা নামলাহা, জাদুঘরের শিল্পী তেজশ হালদার জশ, মোসফিকুর রহমান জোহান, স্থপতি সালাউদ্দিন আহমেদ এবং সমন্বয়কারী হাসান এনাম।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন
Copyrights© 2025 BDSkyNews. All rights reserved.
Site Customized By NewsTech.Com